রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবাঁধে চলছে অসামাজিক কর্মকান্ড
বার্তা বিভাগ বার্তা বিভাগ
অনলাইন ডেস্ক

রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কর্মকান্ড দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন বয়সী মানুষ বিশেষ করে তরুণ, যুবক ও মধ্যবয়সীরা এসব হোটেলের নিয়মিত খদ্দের। এদের মধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদেরও একটি অংশ রয়েছে বলে জানা গেছে।তবে হাই-স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী দেহ ব্যবসায়ীদের রেট তুলনা মূলক বেশী বলে জানা গেছে।
দেহব্যবসায়ী নারীদের মধ্যে গৃহবধূ,ডিভোর্সি নারী, তরুণী ও যুবতীরা রয়েছে।এবং তরুণী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।অনুসন্ধ্যানে জানা যায়,অল্প বয়সী মেয়েদের চাহিদা করেন খদ্দের তাই বিভিন্ন জেলা হতে দেহ ব্যবসায় ইচ্ছুক মেয়েদের নিয়ে আসা হয় বিভিন্ন জেলার দেহব্যবসার সিন্ডিকেটের দালালদের থেকে।
এ বিষয়ে,পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হলেও অভিযানের কয়েকদিন বিরতি দিয়ে পূনরায় ওই হোটেল গুলোতে অসামাজিক কর্মকান্ড শুরু করেন অসাধু দেহ ব্যবসার সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে সাংবাদিক খদ্দের বেশে সুরমা হোটেলে গিয়ে ম্যানেজার মাইনুলের কাছে খোঁজ নিতেই তিনি হোটেল বয়ের সাথে একটি রুমে পাঠালেন। রুমে যেতেই দেখা মিলল তিন অল্প বয়সী মেয়ের।
অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে এসব অসামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।অনেক কর্মকর্তা এইসব হোটেল থেকে মাসিক মোটা অংকের চাঁদা নেয়। আর এইসব দেহ ব্যবসার কারখানার মালিকগন পুলিশ প্রশাসন ম্যানেজ করেই ব্যবসা চালান বলে অভিযোগ আসে পুলিশের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানি সূত্রে জানা গেছে, নগরীর মুড়িপট্রি এলাকার আবাসিক সুরমা, সাহেববাজার বড়মসজিদ এলাকার হোটেল সূর্যমুখি, মালোপাড়া এলাকার যমুনা, গণকপাড়া এলাকার আশ্রয়সহ লক্ষীপুর এলাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে এইসব অসামাজিক কর্মকান্ড- অব্যাহত রয়েছে যা সরজমিনে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়।
সুরমা ও যমুনা আবাসিক হোটেলের মালিক মাইনুল ইসলাম,ম্যানেজারের দায়ীত্ব পালন করেন আলা ও মাইফুল নামের দুইজন ব্যক্তি।
দেহ ব্যবসার বিষয়ে হোটেল সুরমা আবাসিকের ম্যানেজার মাইফুল জানান, শুধু আমাদের হোটেলে নয় নগরীর অনেক হোটেলেই চলছে দেহ ব্যবসা। কারা এদের সাথে নেপথ্যে?জিঙ্গেস করলে তিনি বলেন,এমন প্রশ্নের উত্তর বলা যাবেনা।
অন্যদিকে বাদ নেই হোটেল মুক্তা মনি আবাসিকও,রবিবার দিবাগত রাত ৯ টার সময় পরিচয় গোপন করে খদ্দের পরিচয়ে হোটেল মুক্তা মনিতে প্রবেশ করেন দৈনিক মুক্তির জেলা প্রতিনিধি ও তার সহকর্মী।ভিতরে ঢুকতেই দেখা যায় বেশ কিছু লোকের আনাগনা দেখে বুঝতে বাকি রইলো না যে এরাই খদ্দের, এসেছেন নাইট পার্টি ও নারী সঙ্গী নিয়ে আনন্দ করতে।হোটেলে প্রবেশের পরই ম্যানেজার শফিকুল এসে বললো কোন টা লাগবে দেখুন, এমতাবস্থায় আমরা দেখছি বলে গোপন ক্যামেরাই ধারণ করতে থাকি মুক্তা মনির ভিতরের রমরমা দেহ ব্যবসার চিত্র। এরপর ম্যানেজার শফিকুলকে পরিচয় দিলে সে বলেন, পরিচয় গোপন করে হোটেলে ঢোকা অন্যায় আপনারা কাজটা ভালো করেননি।সাংবাদিক আসলে ফোন করে আসতে হবে।এবং শফিকুলের কাছে মালিকের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাম বলা যাবে না মালিকের নিষেধ, সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়া যাবে না।কার অনুমতি ও ছত্রছায়ায় এই ব্যবসা চলে জানতে চাইলে তিনি বলেন,পুলিশ,প্রশাসন, স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করেই, এরপর শফিকুল প্রতিবেদককে অর্থের বিনিময় রিপোর্ট না করতে বৃথা চেষ্টা করেন, হোটেল মুক্তা মনির ঘটনা তুলে ধরবো ভিডিও চিত্রে,চোখ রাখুন দৈনিক মুক্তির অনলাইন পেইজে।
সূত্র মতে জানা যায়,১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী নারীদের পতিতা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এদের মধ্যে গৃহবধূ,ডিভোর্সী নারী, তরুণী ও যুবতী,এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রীদের সংখ্যাও অবাক করার মতো।এই হোটেলের খদ্দের হচ্ছে নগরীর বড় বড় ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন বিত্তবান পরিবারের ছেলেরা,যারা সকাল সন্ধ্যা একহাতে টাকা উড়ান আর ওইসব টাকা ধরছেন কলেজ ও ভার্সিটির মেয়েরা, বিনিময় দেহ
আর এই নেপথ্যে রয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল ও পুুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্যগন। মাঝে মধ্যে অভিযান চালালে অজ্ঞাত কারণে হোটেলে এসে কাউকে পায় না প্রশাসন। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে-অভিযানের পূর্বেই পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-সদস্যের পক্ষ থেকে হোটেল কতৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়।ফলে তারা আগেই নিরাপদ স্থানে সটকে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নগরীর বিভিন্ন হোটেলে দেহ ব্যবসার পাশাপাশি আবাসিক অভিজাত বাসা বাড়িতে চলছে দেহ ব্যবস্যা। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতার কারনে আবাসিক হোটেল নিরাপদ না থাকলে দালালরা বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বাড়ি ভাড়া করে পতিতাদের থাকার ব্যবস্থা করেন।
বর্তমান একটি চক্র হোটেলের পাশাপাশি বাসা-বাড়ির দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। শুধু তাই নয় আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসার থেকে বাসা-বাড়িতে ব্যবসাটি লাভজনক বলেও জানান এই পেশার এক নারী। আবাসিক এলাকায় দেহ ব্যবসা পরিচালনা করা চক্রটির মধ্যে কিছু রয়েছে ঢাকার অভিজাত হোটেলের মালিক, রাজশাহীর আবাসিক হোটেলের মালিক, প্রভাবশালী মহল ও আরএমপির কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা।
অন্যদিকে,সাহেব বাজার আরডি মাকের্টের এ্যাড: নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, রাজশাহী নগরীর মধ্যে বেশ কিছু নামকরা সরকারী স্কুল,কলেজ ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে।আর এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশেই আবাসিক হোটেলগুলোতে চলছে দেহ ব্যবসা । এমন কর্মকান্ড যুবকদের জন্য কতটুকু নিরাপাদ ? এ ধরনের অসামাজিক কর্মকান্ড সত্যিই উদ্বেগজনক বিষয়। এমন বেহায়াপনা ব্যবসা দ্রুত বন্ধের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে,বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মণ দৈনিক মুক্তির অনুসন্ধানি টিমকে বলেন,হোটেলে দেহ ব্যবসার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না।আপনাদের মাধ্যমে জানলাম।এসকল অসামাজিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।